রাতে কি আছে?

Estimated read time 1 min read

২০১২র শেষের দিকে, দূর্গাপুর মুচিপাড়া। আপাতত দুটি ছোট ছোট ঘর আঁকড়ে পড়ে আছি আমি আর আমার বন্ধু। প্রথম প্রথম রান্না করে খেতে শুরু করিনি, এখানে ওখানে, এ হোটেলে ও হোটেলে খেয়ে বেড়াচ্ছিলাম। আমাদের ঘরের সামনে দিয়েই চলে গিয়েছে GT রোড। এক দিকে আসানসোল, অন্য দিকে কলকাতা।

দোকানের নাম “মিষ্টি মহল”, নামটা প্রথম শুনে মনে হয়েছিল “মিষ্টির দোকান”। আমাদের বাড়ীর মালিক বললেন, “রাতে ওখানেই খেও, বেস ভালো রান্না ওদের”। মাথা চুলকে ভাবলাম, মিষ্টির দোকানে রাতের খাওয়া খাবো?

রাত ৯টা, চললাম দুজনে মিষ্টি মহল। রাস্তায় বেশ ঠাণ্ডা, হুশ হাশ করে বাস ও লরি ছুতছে GT রোডের উপর দিয়ে। রাতের আলো আধারীতে মুচিপাড়ার বাজারে অনেকক্ষণ হাঁটা হাঁটি করে কোনও মিষ্টি মহল চোখে পড়লো না। চোখে পড়লো কয়েকটা রুটি তরকার হোটেল আর কয়েকটা চায়ের দোকান। বিরক্ত হয়ে ঘর মালিক কে কিছু ভদ্র খিস্তি মারতে মারতে এক পথচারী কে জিজ্ঞেস করলাম মিষ্টি মহল এর সন্ধান !!

আঙুল নির্দেশ করে দেখালেন, “ওই তো মিষ্টি মহল”। একটা ভাঙাচোরা দোকানের দিকে পথচারীর আঙ্গুল, আমাদের চোখ সেই আঙুলের নির্দেশ মেনে গিয়ে থামলো একটা আলো আধারী ভাঙাচোরা হোটেলে। আমি বললাম “দাদা মিষ্টি মহল?” তিনি বললেন “ওটাই !”

“বাংলা, রাম। এই ছাড়া আর কিছু পাবেন না। ভাত শেষ, রুটি তড়কা গরম !”

আমাদের প্রশ্নের উত্তর এটা।
আমাদের প্রশ্ন ছিল, “রাতে কি আছে ?”

প্রথমে হোটেলে ঢুকেই বুঝতে পারিনি। আমাদের মত অনেকেই বসে রুটি তড়কা খাচ্ছিল। ব্যাপারটা বুঝলাম ওই ছোকরার কথা শুনে, যে খাবারের অর্ডার নিতে এসেছিলো। আমরাই ভুল বলেছিলাম, আমাদের জিজ্ঞাসা করা উচিৎ ছিল-

“রাতে খাওয়ার জন্য ভাত বা রুটির সাথে কি হবে”

সঞ্জয় হুমানিয়া
২৩ ডিসেম্বর ২০১২


+ There are no comments

Add yours